lactogen 2, lactogen 3 -ল্যাকটোজেন ২,ল্যাকটোজেন ৩ খাওয়ার এবং বানানোর নিয়ম ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

প্রিয় পাঠক, আপনি কি ল্যাকটোজেন ২ বা ল্যাকটোজেন ৩ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ল্যাকটোজেন ২ এবং ল্যাকটোজেন ৩ খাওয়ার নিয়ম,বানানোর নিয়ম ও খাওয়ার বয়স এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে আশা করি ল্যাকটোজেন সম্পর্কিত কিছু মূল্যবান তথ্য পাবেন।

lactogen 2, lactogen 3 -ল্যাকটোজেন ২,ল্যাকটোজেন ৩ খাওয়ার এবং বানানোর নিয়ম ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে তাকে যদি প্যাকেটের দুধ খাওয়ানো হয় সেক্ষেত্রে দুধের ধরন পরিবর্তন হতে থাকে। এটি এমন একটি দুধ যা মায়ের বুকের দুধের অভাব দূর করার পাশাপাশি যে সকল পুষ্টিগুণ একটি বাচ্চা শরীরে দরকার সবগুলোই এই দুধের মধ্যে রয়েছে। একজন মা যখন অপারগতা বসত তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে না পারে তখন বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে ডাক্তার এই দুধ পান করানোর পরামর্শ দেয়।ডাক্তার এর পরামর্শ না নিয়ে খাওয়ানো উচিত নয়।তবে বচ্চার জন্য মায়ের দুধ সবচেয়ে ভালো।

Lactogen 2 খাওয়ার বয়স

বাচ্চা দিনদিন বড় হতে থাকার কারণে তার শরীরে পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিনের চাহিদা আরো বেশি হতে থাকে এর জন্য ৬ থেকে ১২ মাস বয়সের বাচ্চাদের জন্য Lactogen 2 তৈরি করা হয়েছে। এই দুধের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ভিটামিন মিনারেল যেগুলোর প্রত্যেকটি একটি শিশুর জন্য অত্যন্ত জরুরী। এছাড়াও এই দুধের মধ্যে এমন কিছু গুণ রয়েছে যা একটি শিশুকে শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। এই দুধ এমন ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যা বাচ্চারা খুব মজার সাথে খেয়ে থাকে যার কারণে খুব সহজেই তারা সম্পূর্ণ দুধ খেয়ে নেয়। শূন্য থেকে ছয় মাস হওয়ার আগ পর্যন্ত বাচ্চার জন্য Lactogen 1 খাওয়ানো হয় আর বাচ্চার বয়স ৬ মাস যখন থেকে পূর্ণ হয় তখন থেকে ১২ মাস পর্যন্ত তাকে Lactogen 2 খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকে।

Lactogen 2 খাওয়ার নিয়ম

বাচ্চার বয়সের অনুপাতে প্রতি মাসে পানির পরিমাণ এর সাথে সাথে দুধের পরিমাণও বাড়তে থাকে। একটি বাচ্চা যখন বড় হয় তখন তার ক্ষুধার চাহিদাও বেশি হয় এবং শরীরে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি দরকার হয় এজন্য প্রতি মাসে তার খাওয়ার নিয়ম পরিবর্তন হতে থাকে। শিশুর বয়স যখন ছয় এবং সাত মাস চলবে সেই সময় তাকে আট চামচ পরিমাণ Lactogen 2 পানির সাথে মিশিয়ে পান করাবে। এভাবে যত বয়স বাড়তে থাকবে অর্থাৎ ৮ এবং ৯ নম্বর মাসে তাকে নয় চামচ করে Lactogen 2 পানির সাথে মিশিয়ে পান করাবে। একইভাবে ১০ এবং ১১ নম্বর মাসে চামচের পরিমাণ আরেকটি বেড়ে যাবে এবং 12 নম্বর মাসে আরেকটা চামচ বেড়ে যাবে।বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় অবশ্যই তাড়াহুড়া না করে আস্তে ধীরে খাওয়াবেন যাতে করে সে আরামে খেতে পারে এবং দুধ বেধে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকে অন্যথায় বাচ্চার জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।

Lactogen 2 বানানোর নিয়ম

বাচ্চার জন্য যখন আপনি দুধ বানাবেন তখন অবশ্যই সতর্কতার সাথে বানাতে হবে। যেই ফিডারে করে তাকে দুধ খাওয়ানো হয় সেই ফিডার দুধ বানানোর আগে অবশ্যই গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন গরম পানি দিয়ে ধোয়ার কারণে তার ভিতরে যে সকল জীবানো রয়েছে সে জীবাণুগুলো মারা যায়।

প্রথমে পানি গরম করে কিছুক্ষণ রেখে দেবেন যাতে করে পানিতে কুসুম গরম হয়। কুসুম গরম পানি হওয়ার কারণে বাচ্চা আরামে খেতে পারে অন্যথায় বেশি ঠান্ডা হলে বাচ্চা অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং বেশি গরম হলে বাচ্চা খেতে পারবে না এবং মুখ পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এরপর প্যাকেটের গায়ে যেই পরিমাণ পানির সাথে যেই পরিমাণ দুধ মিশাতে বলা হয়েছে তা ভালোভাবে মিশিয়ে নিবেন। মেশানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন যাতে দুধ পানির সাথে একদম ভালোভাবে মিশে যায় এবং কোন দুধ জমা অবস্থায় না থাকে। গুড়ো জমাট অবস্থায় থাকার কারণে বাচ্চার গলায় বেঁধে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অবশ্যই দুধগুলোর ক্ষেত্রে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিবেন তাহলে দেখবেন দুধ সম্পন্ন তরল ভাবে মিশে গেছে।

দুধ বানানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই যে নিয়মে যতটুকু বলা হয়েছে ততটুকুই দুধ মেশাবেন। কখনো অতিরিক্ত পরিমাণে মিসাবেন না। অতিরিক্ত দেয়ার কারণে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। আপনি যদি বাচ্চার উপকার চান এজন্য যেই পরিমাণ দুধ মিশাতে বলা হয় সেই পরিমাণে দুধ আপনি পানির সাথে মিশাবেন।

Lactogen 2 এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

Lactogen 2 এর মধ্যে কোন রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তখনই দেখা দেয় যখন আপনি নিয়মের বিপরীে খাওয়াবেন অথবা তাকে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়াতে থাকবেন। বাচ্চাকে দুধ অথবা যেকোন খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অবশ নিয়ম অনুযায়ী খাওয়ানো উচিত এবং প্যাকেটের দুধ কেনার আগে অবশ্যই ভালোভাবে মেয়াদ দেখে নিতে হবে ও খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও সতর্কতার সাথে খাওয়াতে হবে তাহলে আর কোনো রকমের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না। যা নিয়ম অনুযায়ী যেকোন খাবার খাওয়ান তাহলে বাচ্চা উপকৃত হতে পারবে অন্যথায় ক্ষতি সম্মুখীন হবে। বাচ্চাকে খাওয়ানে ক্ষেত্রে কখনো জোর করে খাওয়াবেন না যখন তার মন চাইবে তাকে তখনই খাওয়াবেন তাহলে বাচ্চার শরীরের জন্য উপকা হবে।

Lactogen 3 খাওয়ার বয়স

Lactogen 3 সেই সব বাচ্চাকে খাওয়ানো হয় যাদের বয়স এক বছর থেকে তিন বছর পর্যন্ত। শূন্য থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের জন্য ল্যাকটোজেন 1 এবং ৬ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত বাচ্চাদের জন্য Lactogen 2 । একই ভাবে বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে যেহেতু তার শরীরে পুষ্টিগুণের প্রয়োজন আরো বেশি হতে থাকে তাই ১ থেকে ৩ বছর বয়সের বাচ্চাদের জন্য ল্যাকটোজেন ৩ প্রস্তুত করা হয়েছে। এই দুধে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন খনিজ পদার্থ মিনারেল এবং বাচ্চার শরীর এবং মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়তা করে। এছাড়াও এই দুধ বাচ্চাদের জন্য এমন ভাবে তৈরি করা হয় যা বাচ্চাদের পেটে খুব সহজে হজম হয় এবং পেট খারাপের কোন সম্ভাবনা থাকে না।

Lactogen 3 খাওয়ার নিয়ম

প্রতিটি বয়সে শিশুদের ল্যাকটোজেন দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে নিয়ম সম্পন্ন ভিন্ন ভিন্ন। বাচ্চার বয়স শূন্য থেকে ছয় মাস পর্যন্ত তাদেরকে খাওয়ানোর নিয়ম এক রকম। যখন বাচ্চার বয়স ছয় মাস থেকে এক বছর হয় তখন তাদেরকে আরেক পদ্ধতিতে পান করাতে হয়।

অপরদিকে যখন আবার বাচ্চার বয়স এক বছর থেকে তিন বছর হয় সে সময় তাদেরকে পান করানোর নিয়ম ভিন্ন। ল্যাকটোজেন ও সেই সব শিশুদের জন্য যাদের বয়স এক বছর থেকে তিন বছর অর্থাৎ এদেরকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে তাদের শরীরের যে পরিমাণ চাহিদা সেই পরিমাণে খাওয়াতে হবে।

পানি যতোটুকু নিবেন তার বিপরীতে যেই কয়টা চামচ দুধের কথা বলা হয় সেই কয় চামচের দুধ পানির সাথে মেশাবেন। চামচ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই প্যাকেটের ভিতরে যে চামচ রয়েছে সেই চামচ ব্যবহার করবেন। ধারাবাহিকভাবে প্রতি মাসে বা দুই মাস পর পরে এক চামচ করে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি হবে যেমনভাবে ল্যাকটোজেন এক এবং ল্যাকটোজেন দুইয়ের ক্ষেত্রে হয়।

বাচ্চাকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়াবেন না। প্যাকেটের উপরে যেই কয়টা চামচ দুধের কথা বলা রয়েছে সে কয় চামচ পানির সাথে মিশিয়ে পান করাবেন তাহলে বাচ্চা উপকৃত হতে পারবে।

শেষ কথা

বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতার সাথে খাওয়াতে হবে। কখনো কোন ভাবে তাড়াহুড়া করা যাবে না এবং দুধ পানির সাথে মেশানোর সময় অবশ্যই ভালোভাবে খেয়াল করে মেশাবেন যাতে কোন রকমের আস্ত অবস্থায় না থাকে। আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও উপকৃত হতে পারে।তবে বচ্চার জন্য মায়ের দুধ সবচেয়ে ভালো।ডাক্তার এর পরামর্শ না নিয়ে খাওয়ানো উচিত নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top