বিকোজিন খেলে কি মোটা হয়?Becozin এর উপকারিতা ও অপকারিতা

বিকোজিন খেলে কি মোটা হয়?Becozin এর উপকারিতা ও অপকারিতা: বিকোজিন হলো ভিটামিন বি এবং জিংক নিয়ে গঠিত একটি ঔষধ। যেটি দেহের রোগ প্রতিরোধমূলক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।মানবদেহের বিভিন্ন রোগ মুক্তির জন্যও বিকোজিন  ব্যবহার করা হয়।তাই আজকের আয়োজনে আমরা বিকোজিন কি?বিকোজিন এর উপকারিতা ও অপকারিতা  এবং বিকোজিন ট্যাবলেট এর কাজ কি , বিকোজিন সিরাপ খেলে কি হয় , বিকোজিন ট্যাবলেট খেলে কি হয় , বিকোজিন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম , বিকোজিন ট্যাবলেট এর দাম ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করবো।

বিকোজিন-খেলে-কি-মোটা-হয়


১. বিকোজিন খেলে কি মোটা হয়

বিকোজিন ট্যাবলেট বা সিরাপ খেলে কি মোটা হয়?

আমাদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা আছে যে বিকোজিন খেলে নাকি মোটা হওয়া যায়।আসলে এমনটা নয়।বিকোজিন ট্যাবলেট খেলে কিন্তু মোটা হওয়া যায় না।

তবে বিকোজিন ট্যাবলেট যেহেতু শারীরিক, মানসিক ও শরীরে শক্তি যোগায় তাই প্রাকৃতিক খাবারগুলো ঠিকমতো হজম করায়।আর হজম শক্তি যত বেশি থাকবে শরীরে পুষ্টি উপাদানও তত বেশি জমা হতে থাকবে। আর পুষ্টি শক্তি জমা হওয়া মানি শরীরের হালকা পরিবর্তন হওয়া।

বিকোজিন ট্যাবলেট এর কাজ কি

বিকোজিন যেহেতু ভিটামিন বি এবং জিংকের সমন্নয়ে গঠিত তাই ভিটামিন বি এবং জিংকের কাজগুলো আগে জানা উচিত।

ভিটামিন বি

আপনি কি জানেন মানবদেহে খাদ্য থেকে শক্তি তৈরিতে কোনটার অবদান সব থেকে বেশি?

উত্তর ভিটামিন বি। ভিটামিন বি এর মাধ্যমেই মানবদেহে খাদ্য থেকে শক্তি রুপান্তরিত হয়।এছাড়াও ভিটামিন-বি শিশু ও বয়স্কদের সুস্থ মস্তিস্কের কার্যকারীতা ঠিক রাখে।এছাড়াও শিশুর বুদ্ধি ও বিকাশেও ভিটামিন বি সাহায্য করে।

বয়স্কদের ভারসাম্যহীনতা ও দুর্বলতার জন্য ডাক্তার ভিটামিন বি যুক্ত ঔষধ প্রেসক্রিপশন করে। বয়সের ভাড়ে যাদের স্মৃতিশক্তি কমে গেছে তাদের জন্য ভিটামিন বি দেওয়া হয়।এছাড়াও ভিটামিন বি এর অভাবজনিত রোগ যেমন,বমি,বমি বমি ভাব,ক্ষুধা মন্দ, ইনফেকশন, চর্মরোগসহ ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

জিংক

মানবদেহের শক্তি ও কার্যক্ষমতা বাড়াতে জিংক কাজ করে। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষুধা মন্দ  ও ঘ্রান ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় জিংক।নখের সাদা সাদা সাদা ইনফেকশন থেকে মুক্তির জন্য ডাক্তার জিংক দিয়ে থাকেন।এছাড়াও প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতেও জিংক সাহায্য করে।

এটি মসৃণ ত্বক ওজন বাড়াতেও সাহায্য করে।রুগির অতিরিক্ত পেটে সমস্যার জন্যও জিংক দেওয়া হয়।এছাড়াও জিংকে এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা এইচডি অ্যাটেনশন  ডেফিকেট হাইপার চিকিৎসায়ও খুব ভালো কাজ করে।

আপনার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু পোষ্টঃ

  1. জেনে নিন কালোজিরার ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে।
  2. জানুন ড্রাগন ফলের ৭টি চমকপ্রদ  উপকারিতা সম্পর্কে।
  3. শিশুর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ১০টি তথ্য।
  4. মোটা হওয়ার ব্যায়াম।

Becozin ট্যাবলেটের উপাদানগুলো

বিকোজিন ট্যাবলেট কিন্তু কয়েক ধরনের বিশেষ উপাদান নিয়ে গঠিত।আর এগুলো আপনার মানসিক এবং শারীরিক বৃদ্ধিতে যথেষ্ট। নিচে বিকোজিন ট্যাবলেটের সকল উপাদান গুলো দেওয়া হলোঃ

  1. Thiamine Mononitrate BP 5 mg.
  2. Riboflavin BP 2 mg.
  3. Pyridoxine Hydrochloride BP 2 mg.
  4. Nicotinamide BP 20 mg.
  5. Zinc Sulphate Monohydrate USP 27.45.
  6. And Zinc 10 mg.

বিকোজিন ট্যাবলেট এবং সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

বয়স ভেদে বিকোজিন ট্যাবলেট এবং সিরাপের খাওয়ার নিয়মের ভিন্নতা রয়েছে।নিচে খাবার নিয়মগুলো দেওয়া হলো,

সিরাপ এর ক্ষেত্রে

  1. ১ বছরের কম বাচ্চাঃ ১ চামচ করে দিনে ১ থেকে ২ বার।
  2. ১-১৬ বছরের ক্ষেত্রেঃ ২ চামচ করে ১ বার থেকে ৩ বার।
  3. ১৬ বছরের ক্ষেত্রেঃ ২ চামচ করে ২-৩ বার।

ট্যাবলেটের ক্ষেত্রে

একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও ৩০ কেজি ওজনের ঊর্ধ্বে ক্ষেত্রে ১-২ টি ট্যাবলেট দৈনিক ২-৩ বার।

নোটঃতবে রোগের ধরনের ওপর ভিত্তি করে  খাবারের নিয়মের ভিন্নতা হতে পারে। এই জন্য অবশ্যই ডাক্তারের সাথে আলাপ করে নিয়ম জেনে নেওয়া উচিত।

বিকোজিন ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সত্যিকার অর্থে বিকোজিন ট্যাবলেট এর কেনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।কারন এই ট্যাবলেটটি দেহের জন্য সুসহনীয়।তবে বিকোজিন ট্যাবলেট খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে বমি,বমি বমি ভাব,পাকস্থলীর সমস্যা, ডায়রিয়া ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।তবে এই রকম লক্ষণ খুব কম দেখা দেয়।

এছাড়াও যাদের শরীরে এলার্জি আছে তাদের এলার্জি বেড়ে যায়।এজন্য এলার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে বিকোজিন না খাওয়াই ভালো।অপারেশন রোগীর ক্ষেত্রেও কিন্তু বিকোজিন ব্যবহার করা যাবে না। বিশেষ করে সিজারের রুগীদের ক্ষেত্রে তো ব্যবহার করা যাবেই না।

ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বিকোজিন খান

ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বিকোজিন খাওয়া উচিত নয় কারন আপনার রোগ দেখে বিকোজিন খাওয়ার মাত্রা ভিন্নতা বা না খাওয়াও লাগতে পারে।আপনি যদি ভুল ভাবে বিকোজিন কেনো যে কোনো ঔষধ সেবন করলেই ক্ষতিতে পড়বেন।তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ গ্রহণ করা উচিত নয়।

গর্ভবতী মহিলারা বিকোজিন ট্যাবলেট খেতে পারবে না।তাদের ক্ষেত্রে এটা নির্দেশিত নয়।

বিকোজিন ট্যাবলেট সিরাপের দাম কত

বিকোজিন ট্যাবলেট পট হিসেবে বিক্রি হয়।১ পটে সর্বোচ্চ ৩০টি ট্যাবলেট থাকে।৩০টি ট্যাবলেটের দাম ৯০ টাকা।সেই হিসেবে প্রতিটি ট্যাবলেট এর মূল্য পড়ে ৩ টাকা পিস।প্রতি ১০০ এম এল বিকোজিন সিরাপের মূল্য ৫৫ টাকা এবং প্রতি ২০০ এম এল এর মূল্য ১১০ টাকা মাত্র।

অন্যান্য ঔষধের সাথে বিকোজিন

বিকোজিন কিছু ঔষধের সাথে বিক্রিয়া করে থাকে।এর ফলে অন্যান্য বিক্রিয়াকৃত ঔষধের সাথে বিকোজিন ট্যাবলেট বা সিরাপ সেবনে মারাত্মক ক্ষতির কারন হতে পারে।বিকোজিন ঔষদের সাথে আপনি যদি টেট্রাসাইক্লিন গুরুপের ঔষধ খান সেটা অনেক ক্ষতির কারন হবে।এছাড়াও আরোও কিছু ঔষধ আছে যার সাথে বিকোজিন সেবন করা যায় না।এজন্য বিকোজিন সেবনের পূর্বে ডাক্তারের  পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বিকোজিন সংরক্ষণ পদ্ধতি

প্রতিটা ঔষধেরই কিছু সংরক্ষণ পদ্ধতি রয়েছে।ঠিক তেমনি বিকোজিন এরও সংরক্ষণ পদ্ধতি রয়েছে। বিকোজিন ঔষধ অবশ্যই আদ্রতা থেকে দূরে রাখতে হবে।সব সময় চেষ্টা করবেন আদ্রতা ও শুষ্ক স্থানে রাখতে। আপনি সর্বোচ্চ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বিকোজিন ঔষধ রাখবেন।আর অবশ্যই বিকোজিন বাচ্চাদের হাতের নাগালের বাইরে রাখবেন।

কোন কোম্পানির বিকোজিন খাবেন

বিকোজিন মূলত স্কয়ার কোম্পানির একটি ঔষধের নাম মাত্র। বিকোজিন বিভিন্ন কোম্পানির আছে।আপনি যে কোনো একটি সেবন করতে পারবেন।কারন ট্যাবলেটের মূল হলো Vitamin B Complex and Zinc । তাই যেকোন একটি ব্যবহার করলেই হবে।

তবে চেষ্টা করবেন বড় কোম্পানিগুলোর ঔষধ নিতে।কারন কোম্পানি যত বড় হবে ঔষধের মানও তত ভালো হবে।তবে আমি স্কয়ার, ইনসেপ্টা, বেক্সিমকো, এস কে এফ, রেনেটা ইত্যাদি ব্রান্ডের কোম্পানির থেকে বিকোজিন নিবেন।

বিকোজিন সম্পর্কে শেষ কথা

প্রিয় পাঠক পাঠিকা,আমাদের আজকের আয়োজনে আমরা বিকোজিন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।এছাড়াও বিকোজিনে থাকা ভিটামিন বি ও জিংক,বিকোয় ট্যাবলেটের উপাদান,বিকোজিন ট্যাবলেট খেলে কি হয়,বিকোজিন ট্যাবলেট সিরাপের দাম কত ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে বিকোজিনে থাকা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং জিংকের অবদান অনেক। শরীরে বিকোজিন এ থাকা ভিটামিন বি এবং জিংকের অভাবে রুগীর মৃত্যুও পর্যন্ত হতে পারে।এজন্য যত সম্ভব জিংক এবং ভিটামিন বি জাতীয় খাবার খেতে হবে।অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিকোজিন খাবেন।

বিকোজিন নিয়ে কিছু প্রশ্নোত্তর

১.বিকোজিন কি?

উত্তরঃ বিকোজিন হলো ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং জিংকের সমন্বয়ে একটি ওষুধ যা মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বৃদ্ধি বাড়ায়।

২. খাদ্যেকে শক্তিতে রুপান্তরিত করে কোনটি?

উত্তরঃ ভিটামিন বি।

৩. শরীরে ভিটামিন বি এর ঘাটতি দেখা দিলে কোন সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।

উত্তরঃ বমি,বমি বমি ভাব,ডায়রিয়া, পাকস্থলীর সমস্যা।

৪. নখের সাদা সাদা দাগ হয় কোনটির অভাবে?

উত্তরঃ জিংকের অভাবে।

৫. বিকোজিন খেলে কি মোটা হয়?

উত্তরঃ না।বিকোজিন খেলে মোটা হয় না।

৬. বিকোজিন কি গর্ভবতী মহিলারা খেতে পারবে?

উত্তরঃ না,খেতে পারবে না।

৭. অন্যান্য ঔষধের সাথে কি বিকোজিন এর বিক্রিয়া হয়?

উত্তরঃ হ্যা। ডক্সিসাইক্লিন ঔষধের সাথে বিকোজিন বিক্রিয়া করে।

৮.বিকোজিন ট্যাবলেট কত ডিগ্রি সেলাসিয়াস তাপমাত্রার নিচে রাখতে হবে।

উত্তরঃ সর্বোচ্চ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে রাখতে হবে।

3 thoughts on “বিকোজিন খেলে কি মোটা হয়?Becozin এর উপকারিতা ও অপকারিতা”

  1. Pingback: মোবাইল নাম্বার দিয়ে লোকেশন ট্রাকিং বাংলাদেশ -

  2. আমি বিকোজিন টেবলেট কিনসি ২ মাস আগে।কিন্তু খাই নাই।আমি কি এখন খেতে পারবে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top